Header Ads

test

রহস্যময় পৃথিবী এবং এর ইতিহাস ইস্টার দ্বীপ


রহস্যময় পৃথিবী এবং এর ইতিহাস July 17, 2012 ইস্টার দ্বীপ ( প্রথম পর্ব ) রহস্যে আবৃত ইস্টার দ্বীপ যেন এক অচেনা ভূবন। ১৭২২ সালের ইস্টারসানডের দিন, এক ওলন্দাজ অভিযাত্রী দল প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ভাসতে ভাসতে একটি দ্বীপে এসে উপস্থিত হলেন। যে দ্বীপের চারদিকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য দানব আকৃতির মূর্তি। অকল্পনীয় বিশাল দানব আকৃতির মূর্তিরা যেন তাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। দ্বীপের এই সব মূর্তিগুলো দেখে ওলন্দাজ অভিযাত্রীদলের সবাইতো অবাক! সবার কৌতুহলে সেই ওলন্দাজ অভিযাত্রী দলের ক্যাপ্টেন অ্যাডমিরান জ্যাকব রগেভিন সিদ্ধান্ত নিলেন এই দ্বীপেই জাহাজের নোঙর ফেলবেন। তাঁর যেই কথা সেই কাজ। তৎক্ষনাৎ সবাই জাহাজেই অবস্থান করলেন। এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা প্রায়। দ্বীপের চারদিক জুড়ে নেমেছে অন্ধকার। ফলে সবাই সারারাত ভয়ে কাঠ হয়ে দ্বীপের দিকে তাকিয়ে রইলেন-কখন ভোর হবে, চারদিক আলো করে সূর্য উঠবে পুরো দ্বপি জুড়ে। সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভয় অবশ্য ভেদে গেলো সবার। যখন দেখলো তারা, নিশ্চল মূর্তিগুলো সত্যিই মূর্তি। অভিযাত্রী দল লক্ষ্য করলেন,বিশাল বিশাল পাথরের মূর্তিগুলো সারা দ্বীপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে উৎসাহের সন্দে সবাই জাহাজ থেকে নেমে পড়লেন। দ্বীপের মান। মানুষ জনের সঙ্গেও দেখা হল সবার। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয়-অভিযাত্রী দল তথ্য নিয়ে জানতে পারলেন-দ্বীপের মানুষেরা এই মূর্তিগুলো গড়েনি। তারা জানেও না, কেবা কারা এই মূর্তিগুলো গড়েছিলো। তবে এই মূর্তিগুলোকে দেবতা মনে করে দ্বীপবাসীরা নিয়মিত পুজো দেয়। ফরে দ্বীপে ছুড়িয়ে থাকা এই মূর্তিগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে পুরো ওলন্দাজ অভিযাত্রী দলের আরো কৌতুহল বেড়ে গেলো। সেই দিনটি ছিল ইস্টারসানডে। তাই কৌতুহল বশেই ক্যাপ্টেন রগেভিন এই দ্বীপের নামকরণ করলেন ইস্টার আইল্যান্ড নিজের জার্নালে তিনি ইস্টার আইল্যান্ডের এক অদ্ভুত দৃশ্যের কথা লেখেন। তা হল-বিস্ময়কর রকমের বড় পাথরগুলো উপকূল বরাবর দাঁড় করানো ছিল। পরবর্তী বছরগুলোতে অনেকে ওই অদ্ভুত মূর্তিগুলো সম্বন্ধে অনেক মজার মজার মন্তব্য করেছেন। আসলে, ইস্টার আইল্যান্ডের মূর্তিগুলো সবইতৈরি হয়েছে বিশাল পাথর কুঁদে বা কেটে। কিন্তু গবেষকদের প্রশ্ন হল এইদ্বীপ বাসীরা সেই কৌশল শিখলো কি করে? আর পাথরগুলোই তারা বয়ে আনলো কিভাবে এবং কোথা থেকে? এব্যাপারে দ্বীপবাসীদের কেউ কিছু জানেনা। অথচ যুগ যুগ ধরে এই মূর্তিগুলো ইস্টারদ্বীপেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে অভিযাত্রী দলের সকলেই অবাক হলেন। এরপর ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীতে এই রহস্যের কথা ছড়িয়ে পড়লো। ইস্টার আইল্যান্ড নিয়ে শুরু হল গবেষণা। বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব থর হেয়ারডাল প্রচুর গবেষণা ও খনন কার্যের পর তথ্য দিলেন ৩৮০ খৃষ্টাব্দে পেরু থেকে কিছু মানুষ এসে এই দ্বীপে বসবাস শুরু করেন। তারা তৈরী করেছিলো রাস্তা, মন্দির, মানমন্দির ও সুরঙ্গ পথ। ১২৮০ খৃষ্টাব্দে পেরু থেকেই অন্য লোকজন এসে দ্বীপটি দখল করে নেন। ধারণা করা হয়, তারাই এই মূর্তিগুলো গড়েন। মূর্তিগুলোর কান লম্বা। কারণ পেরুবাসীদের মধ্যে কানে ভারি দুল পরে কান লম্বা করার রেওয়াজ ছিল। এর প্রায় চারশত বছর পর ১৬৮০ সালে পলি নেশীয়রা এশিয়ার দিক থেকে এসে দ্বীপটি অধিকার করে, এবং সে সময় মূর্তি তৈরি প্রচলন লোপ পায়। রেডিও কার্বন পরীক্ষার সাহায্যে থর হেয়ারডাল এসব তথ্য পৌঁছালেও বহু গবেষক এর বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, দ্বীপ সংলগ্ন আগ্নেয়গিরি থেকে বিরাট গাছের গুঁড়ির সাহায্যে পাথর গড়িয়ে এনে এই মূর্তিগুলো গড়া হয়েছে।তাই থরের এই তত্ত্ব অনেকে মেনে নিলেন না। তাদের মতে, এক অতি প্রাচীন, অথচ উন্নত সভ্যতার চিহ্ন এগুলো। হয়তো সেই সভ্যতা প্রকৃতির খেয়ালে কোন কালে প্রশান্ত মহাসাগরের অতলে তলিয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু গবেষক এব্যাপারে তথ্য দিয়েছেন ভিন্ন ভাবে। তাদের মতে ১৭৭০সালে স্পেনের একদল মানুষ ফিলিপ গঞ্জালেসের নেতৃত্বে এসে মূর্তিগুলোর টুকরো কুড়াল দিয়ে কেটে নিয়ে যেতে চাইলেন। কিন্তু দ্বীপবাসী মানুষের মিলিত আক্রমণে তারা পিছিয়ে আসেন। এরই মধ্যেই আবার এই একই দ্বীপের আবিষ্কৃত হল কিছু কাঠের বোর্ড, যার ওপর লেখা আছে আশ্চর্য সব লিপি যার পাঠোদ্ধার করতেদ্বীপের মানুষেরাতো বটেই, বড়ো বড়ো পন্ডিতরা পড়তে ও অক্ষম হলেন। এগুলোরনাম দেয়া হল রং গোরগো। ১৮০০ শতাব্দীতে মূর্তিগুলো মাটিতে পড়ে যায়। এর কিছুকাল পরেই প্রত্নতত্ত্ববিদগন মূর্তিগুলো সমন্বন্ধে অনুসন্ধান শুরু করেন। (চলবে ....) — with Mithun Mahfuz.

No comments