toten
তুতেন খামেনের মমি রহস্য –
মিসরীয় সভ্যতা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন এবং রহস্যময় সভ্যতা। আর এই রহস্যমণ্ডিত সভ্যতার অপার নিদর্শন হচ্ছে পিরামিড। পিরামিড ও মমির রহস্য ভেদ করতে শত শত বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু আজও সেই রহস্য উন্মোচনে সফল হয়নি কেউ। বরং যুগে যুগে নানা বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়েছে। মিসরীয় পিরামিডের ভেতরে প্রাপ্ত মমির মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মমি হচ্ছে বালক রাজা তুতেন খামেনের মমি। এই মমি আবিষ্কারের পর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের রহস্যজনক মৃত্যু এই মমিকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে।
ফারাওদের ১৮তম রাজবংশের রাজাদের মধ্যে তুতেন খামেন ছিলেন ১১ বা ১২তম। তিনি ১৩৩৩ থেকে ১৩২৪ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ। কারও কারও মতে ১৩৩৬ থেকে ১৩২৭ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ পর্যন্ত মিসরের রাজত্ব করেন। তিনি রানী আনখেসেনপাতিন নাম অল্প বয়স্ক এক যুবুতীকে বিয়ে করেন। গবেষকদের মতে রানী আনখেসেনপাতিন আসলে তুতেন খামেনের বোন ছিলেন। তুতেন খামেনের পিতার নাম ছিল আখেনাটেন। তার পিতার পরই তিনি সিংহাসনে বসেন। তার পিতা 'আতেন' (সূর্য দেবতা) নামক একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তনের জোর প্রচেষ্টা চালান। আখেনাটেন ও তার স্ত্রী নেফারতিতি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একেশ্বরবাদ ধারনার প্রচলণ করেন। সেই সময়ে মিসরের লোকেরা বহু ঈশ্বরে আসক্ত ছিল। আগে মিসরের লোকেরা 'আমুন' (বায়ু এবং শ্বাস নিঃশ্বাসের দেবতা) এর উপাসক ছিল। তার পিতা তখনকার মিসরের জনগণের ওপর তার সৃষ্ট ধর্মটি চাপিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ শুরু করে এবং পূর্বের ধর্মীয় উপাসনালয় এবং স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা শুরু করে। তার লক্ষ্য ছিল আমুন নামটি বিলুপ্ত করা। ফলে তৎকালীন মিসরের জনগণের মধ্যে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি হয়। তখন তার পিতা মারা যান কিন্তু কি কারণে কেউ জানে না। তবে অধিকাংশ গবেষকের মতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
খ্রিস্ট জন্মের শত শত বছর আগে মিসরে গড়ে উঠা মিসরীয় সভ্যতার রহস্যমণ্ডিত নিদর্শন পিরামিড। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, সবচেয়ে প্রাচীন হলেও সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একমাত্র পিরামিডই এখনো পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তখনকার যুগে মিসরের লোকেরা ফারাও রাজাদের নিজেদের দেবতা মনে করত এবং মৃত্যুর পর তাদের পরবর্তী জীবনে চলার জন্য সমাধিতে তার মমির সঙ্গে প্রচুর ধনসম্পদ দেওয়া হতো। তাদের ধারনা ছিল মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তি আবারো জীবিত হয়ে ওঠে। আর সেকারনেই মৃত্যুর পরের জীবনে তার সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য মমির সঙ্গে এসব ধন-সম্পত্তি দিয়ে দেয়া হতো। তবে মমির ভেতরের ধন-সম্পদকে চোরদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ফারাও রাজাদের এসব সমাধিকে নিরাপদ করা হতো। সেখানে তৈরি করা হতো নানান ধাঁধাঁ। আর সেই ধাঁধাঁ জটিল হয়ে ওঠতো পিরামিড আকৃতির কাঠামোর কারনে। কিন্তু এসব নিরাপত্তা চেষ্টা বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়। প্রাচীন যুগের চোর-ডাকাতরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ঠিকই সমাধির পথ খুঁজে বের করত এবং সব ধন-সম্পদ আত্মসাৎ করত। সেই একই কারণে অর্থাৎ গুপ্তধনের আশায় মিসরে গবেষকরা হন্যে হয়ে সমাধিগুলোতে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মিসরের অতিপ্রাচীন স্থাপত্য আবিষ্কার বিষয়ক অভিযানগুলো পূর্ণাঙ্গ আঙ্গিকে শুরু হয় ১৮ শতাব্দীতে।
১৯ শতাব্দীতে এসে ইউরোপীয়রাও এ গুপ্তধনের সন্ধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তখন তাদের অনুসন্ধানে প্রত্নতাত্তি্বক মূল্যের চেয়ে গুপ্তধনের লোভটাই প্রকট ছিল। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এসব অনুসন্ধান কাজে অর্থ বিনিয়োগ করতো। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের হতাশ হতে হয়। কারণ তারা গবেষণা করে কোনো সমাধি আবিষ্কার করে দেখত তাদের আগেই কেউ না কেউ গুপ্তধন সরিয়ে নিয়েছে। ১৮ শতাব্দীতেও সমাধিগুলোতে কোনো অভিশাপের অস্তিত্ব থাকতে পারে, তা সাধারণ মানুষ জানত না। কিন্তু ১৯ শতকের প্রথম দিকে ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার ও তার দল তুতেন খামেন নামক একজন ফারাও রাজার সমাধি এবং তাতে প্রচুর ধনসম্পত্তি খুঁজে পান। তারপর থেকেই সমাধিগুলোতে যে অভিশাপও বিদ্যমান থাকতে পারে তা সবার নজরে আসে। কারণ এ সমাধিটির প্রবেশপথে খোদিত ছিল একটি অভিশাপ। যা এখন সারা বিশ্বেই তুতেন খামেনের অভিশাপ নামে পরিচিত। কেমন ছিল তুতেনখামেনের মমির আবিষ্কারের ঘটনা?
১৮৯১ সালের কথা। হাওয়ার্ড কার্টার নামক একজন অল্পবয়স্ক ইংলিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ মিসরে পা রাখেন। মিসরের প্রাচীন স্থাপনা নিয়ে তার প্রচণ্ড আগ্রহ। কারণ স্থাপত্যশিল্পের এত প্রাচীন এবং সুসংবদ্ধ নমুনা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া অসম্ভব। বছরের পর বছর তিনি কাজ করে গেলেন। তার অদম্য শিল্পগুণকে কাজে লাগিয়ে রানী হাটসেপসুটের মন্দিরের দেয়ালের ছবিগুলোর নমুনা তৈরি করলেন প্রায় ছয় বছর ধরে।
মিসরে থাকাকালীন বছরগুলোতে তিনি তার প্রাপ্ত গবেষণা এবং অনুসন্ধান থেকে এটা অনুভব করছিলেন, কমপক্ষে একটি অনাবিষ্কৃত সমাধি এখনো মিসরে রয়েছে। আর তা হচ্ছে ফারাও রাজা তুতেন খামেনের সমাধি এবং তার ধারণাই সত্য হলো। নীলনদের পাশে থেবা পর্বতমালায় অবস্থিত কিংক উপত্যকা। সেখানে ৩ হাজার বছর আগে সমাধিস্থ করা হয়েছিল প্রায় ৪০ জন মিসরীয় ফারাওকে। আর ১৯২২ সালে সেখানে সর্বকালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্মত্বাত্তি্বক আবিষ্কার সংঘটিত হয়। এর আগে বহু বছর ধরে অনেক প্রত্মতত্ত্ববিদ ওই উপত্যকায় প্রচুর অনুসন্ধান চালিয়েছেন। জায়াগটি রীতিমতো চষে ফেলেছেন। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা জন্মেছিল, সেখানে মূল্যবান আর কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তা সত্ত্বেও লর্ড কারনাভান নামের জনৈক উৎসাহী শখের প্রত্মতত্ত্ববদি কিংক প্রত্যকায় নতুন করে অনুসন্ধান কাজ চালাবেন বলে ঠিক করলেন। এ কাজে তাকে সাহায্য করার জন্য তিনি এক প্রত্নতত্ত্ববিদ খননকারক নিযুক্ত করেন। ভদ্রলোকের নাম ছিল হাওয়ার্ড কার্টার। বেশ কয়েক বছর খনন কাজ চালিয়েও কার্টার কোনো কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হলেন না। এক সময় বেশ হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। ওদিকে পয়সা-কড়িও শেষ। তাই সিদ্ধান্ত নেন ষষ্ঠ রেমেরেসের সমাধির পাশে এক জায়গায় আরও ক'মাস অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে যাবেন তিনি। এতেও যদি কোনো কিছু আবিষ্কার করতে ব্যর্থ হন, তবে এ কাজ বন্ধ করে দেবেন। শুরু হলো মাটি খোঁড়া। নয় দিনের মাথায় তিনি সিল করা একটি চমৎকার সামাধি আবিষ্কার করলেন। সে সময় তার নিয়োগকর্তা কারনাভান তার সঙ্গে ছিলেন না। তিনি তখনই কারনাভানকে টেলিগ্রাম করলেন। খবর পেয়ে ছুটে এলেন কারনাভান........... ২য় পর্ব আগামীকাল এই সময়।
বিঃদ্রঃ ফেসবুক এর নিয়ম আনুযায়ী, আমাদের পোস্টে নিয়মিত লাইক না দিলে ধীরে ধীরে আমাদের পোস্ট আপনার অয়ালে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনার স্বার্থেই আমাদের পোস্ট নিয়মিত আপনার ওয়ালে দেখতে চাইলে প্রতিটি পোস্ট এ লাইক দিয়ে নিজেকে অ্যাক্টিভ রাখুন। এছাড়াও গেট নোটিফিকেশন অন করে রাখতে পারেন বা আমাদের পেজ বুকমার্ক করে রাখতে পারেন, তাহলে আমাদের সব পোস্ট আপনার হাতের নাগালেই থাকবে। ধন্যবাদ!!!
মিসরীয় সভ্যতা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন এবং রহস্যময় সভ্যতা। আর এই রহস্যমণ্ডিত সভ্যতার অপার নিদর্শন হচ্ছে পিরামিড। পিরামিড ও মমির রহস্য ভেদ করতে শত শত বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু আজও সেই রহস্য উন্মোচনে সফল হয়নি কেউ। বরং যুগে যুগে নানা বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়েছে। মিসরীয় পিরামিডের ভেতরে প্রাপ্ত মমির মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মমি হচ্ছে বালক রাজা তুতেন খামেনের মমি। এই মমি আবিষ্কারের পর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের রহস্যজনক মৃত্যু এই মমিকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে।
ফারাওদের ১৮তম রাজবংশের রাজাদের মধ্যে তুতেন খামেন ছিলেন ১১ বা ১২তম। তিনি ১৩৩৩ থেকে ১৩২৪ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ। কারও কারও মতে ১৩৩৬ থেকে ১৩২৭ খ্রিস্টপূর্ব অব্দ পর্যন্ত মিসরের রাজত্ব করেন। তিনি রানী আনখেসেনপাতিন নাম অল্প বয়স্ক এক যুবুতীকে বিয়ে করেন। গবেষকদের মতে রানী আনখেসেনপাতিন আসলে তুতেন খামেনের বোন ছিলেন। তুতেন খামেনের পিতার নাম ছিল আখেনাটেন। তার পিতার পরই তিনি সিংহাসনে বসেন। তার পিতা 'আতেন' (সূর্য দেবতা) নামক একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তনের জোর প্রচেষ্টা চালান। আখেনাটেন ও তার স্ত্রী নেফারতিতি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একেশ্বরবাদ ধারনার প্রচলণ করেন। সেই সময়ে মিসরের লোকেরা বহু ঈশ্বরে আসক্ত ছিল। আগে মিসরের লোকেরা 'আমুন' (বায়ু এবং শ্বাস নিঃশ্বাসের দেবতা) এর উপাসক ছিল। তার পিতা তখনকার মিসরের জনগণের ওপর তার সৃষ্ট ধর্মটি চাপিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ শুরু করে এবং পূর্বের ধর্মীয় উপাসনালয় এবং স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা শুরু করে। তার লক্ষ্য ছিল আমুন নামটি বিলুপ্ত করা। ফলে তৎকালীন মিসরের জনগণের মধ্যে বিশৃক্সখলা সৃষ্টি হয়। তখন তার পিতা মারা যান কিন্তু কি কারণে কেউ জানে না। তবে অধিকাংশ গবেষকের মতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
খ্রিস্ট জন্মের শত শত বছর আগে মিসরে গড়ে উঠা মিসরীয় সভ্যতার রহস্যমণ্ডিত নিদর্শন পিরামিড। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, সবচেয়ে প্রাচীন হলেও সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একমাত্র পিরামিডই এখনো পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তখনকার যুগে মিসরের লোকেরা ফারাও রাজাদের নিজেদের দেবতা মনে করত এবং মৃত্যুর পর তাদের পরবর্তী জীবনে চলার জন্য সমাধিতে তার মমির সঙ্গে প্রচুর ধনসম্পদ দেওয়া হতো। তাদের ধারনা ছিল মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তি আবারো জীবিত হয়ে ওঠে। আর সেকারনেই মৃত্যুর পরের জীবনে তার সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য মমির সঙ্গে এসব ধন-সম্পত্তি দিয়ে দেয়া হতো। তবে মমির ভেতরের ধন-সম্পদকে চোরদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ফারাও রাজাদের এসব সমাধিকে নিরাপদ করা হতো। সেখানে তৈরি করা হতো নানান ধাঁধাঁ। আর সেই ধাঁধাঁ জটিল হয়ে ওঠতো পিরামিড আকৃতির কাঠামোর কারনে। কিন্তু এসব নিরাপত্তা চেষ্টা বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়। প্রাচীন যুগের চোর-ডাকাতরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ঠিকই সমাধির পথ খুঁজে বের করত এবং সব ধন-সম্পদ আত্মসাৎ করত। সেই একই কারণে অর্থাৎ গুপ্তধনের আশায় মিসরে গবেষকরা হন্যে হয়ে সমাধিগুলোতে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মিসরের অতিপ্রাচীন স্থাপত্য আবিষ্কার বিষয়ক অভিযানগুলো পূর্ণাঙ্গ আঙ্গিকে শুরু হয় ১৮ শতাব্দীতে।
১৯ শতাব্দীতে এসে ইউরোপীয়রাও এ গুপ্তধনের সন্ধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তখন তাদের অনুসন্ধানে প্রত্নতাত্তি্বক মূল্যের চেয়ে গুপ্তধনের লোভটাই প্রকট ছিল। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এসব অনুসন্ধান কাজে অর্থ বিনিয়োগ করতো। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের হতাশ হতে হয়। কারণ তারা গবেষণা করে কোনো সমাধি আবিষ্কার করে দেখত তাদের আগেই কেউ না কেউ গুপ্তধন সরিয়ে নিয়েছে। ১৮ শতাব্দীতেও সমাধিগুলোতে কোনো অভিশাপের অস্তিত্ব থাকতে পারে, তা সাধারণ মানুষ জানত না। কিন্তু ১৯ শতকের প্রথম দিকে ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার ও তার দল তুতেন খামেন নামক একজন ফারাও রাজার সমাধি এবং তাতে প্রচুর ধনসম্পত্তি খুঁজে পান। তারপর থেকেই সমাধিগুলোতে যে অভিশাপও বিদ্যমান থাকতে পারে তা সবার নজরে আসে। কারণ এ সমাধিটির প্রবেশপথে খোদিত ছিল একটি অভিশাপ। যা এখন সারা বিশ্বেই তুতেন খামেনের অভিশাপ নামে পরিচিত। কেমন ছিল তুতেনখামেনের মমির আবিষ্কারের ঘটনা?
১৮৯১ সালের কথা। হাওয়ার্ড কার্টার নামক একজন অল্পবয়স্ক ইংলিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ মিসরে পা রাখেন। মিসরের প্রাচীন স্থাপনা নিয়ে তার প্রচণ্ড আগ্রহ। কারণ স্থাপত্যশিল্পের এত প্রাচীন এবং সুসংবদ্ধ নমুনা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া অসম্ভব। বছরের পর বছর তিনি কাজ করে গেলেন। তার অদম্য শিল্পগুণকে কাজে লাগিয়ে রানী হাটসেপসুটের মন্দিরের দেয়ালের ছবিগুলোর নমুনা তৈরি করলেন প্রায় ছয় বছর ধরে।
মিসরে থাকাকালীন বছরগুলোতে তিনি তার প্রাপ্ত গবেষণা এবং অনুসন্ধান থেকে এটা অনুভব করছিলেন, কমপক্ষে একটি অনাবিষ্কৃত সমাধি এখনো মিসরে রয়েছে। আর তা হচ্ছে ফারাও রাজা তুতেন খামেনের সমাধি এবং তার ধারণাই সত্য হলো। নীলনদের পাশে থেবা পর্বতমালায় অবস্থিত কিংক উপত্যকা। সেখানে ৩ হাজার বছর আগে সমাধিস্থ করা হয়েছিল প্রায় ৪০ জন মিসরীয় ফারাওকে। আর ১৯২২ সালে সেখানে সর্বকালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্মত্বাত্তি্বক আবিষ্কার সংঘটিত হয়। এর আগে বহু বছর ধরে অনেক প্রত্মতত্ত্ববিদ ওই উপত্যকায় প্রচুর অনুসন্ধান চালিয়েছেন। জায়াগটি রীতিমতো চষে ফেলেছেন। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা জন্মেছিল, সেখানে মূল্যবান আর কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তা সত্ত্বেও লর্ড কারনাভান নামের জনৈক উৎসাহী শখের প্রত্মতত্ত্ববদি কিংক প্রত্যকায় নতুন করে অনুসন্ধান কাজ চালাবেন বলে ঠিক করলেন। এ কাজে তাকে সাহায্য করার জন্য তিনি এক প্রত্নতত্ত্ববিদ খননকারক নিযুক্ত করেন। ভদ্রলোকের নাম ছিল হাওয়ার্ড কার্টার। বেশ কয়েক বছর খনন কাজ চালিয়েও কার্টার কোনো কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হলেন না। এক সময় বেশ হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। ওদিকে পয়সা-কড়িও শেষ। তাই সিদ্ধান্ত নেন ষষ্ঠ রেমেরেসের সমাধির পাশে এক জায়গায় আরও ক'মাস অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে যাবেন তিনি। এতেও যদি কোনো কিছু আবিষ্কার করতে ব্যর্থ হন, তবে এ কাজ বন্ধ করে দেবেন। শুরু হলো মাটি খোঁড়া। নয় দিনের মাথায় তিনি সিল করা একটি চমৎকার সামাধি আবিষ্কার করলেন। সে সময় তার নিয়োগকর্তা কারনাভান তার সঙ্গে ছিলেন না। তিনি তখনই কারনাভানকে টেলিগ্রাম করলেন। খবর পেয়ে ছুটে এলেন কারনাভান........... ২য় পর্ব আগামীকাল এই সময়।
বিঃদ্রঃ ফেসবুক এর নিয়ম আনুযায়ী, আমাদের পোস্টে নিয়মিত লাইক না দিলে ধীরে ধীরে আমাদের পোস্ট আপনার অয়ালে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনার স্বার্থেই আমাদের পোস্ট নিয়মিত আপনার ওয়ালে দেখতে চাইলে প্রতিটি পোস্ট এ লাইক দিয়ে নিজেকে অ্যাক্টিভ রাখুন। এছাড়াও গেট নোটিফিকেশন অন করে রাখতে পারেন বা আমাদের পেজ বুকমার্ক করে রাখতে পারেন, তাহলে আমাদের সব পোস্ট আপনার হাতের নাগালেই থাকবে। ধন্যবাদ!!!
তুতেন খামেনের মমি রহস্য – সোনার মুখোশে ঢাকা ফারাও!!!
মাটি খুঁড়ে কার্টার প্রথমেই একটি সিঁড়ির সন্ধান পান। ফারাও তুতেন খামেনের নাম খোঁদাই করা একটি দরজায় গিয়ে সিঁড়িটি শেষ হয়েছে। কারনাভান ও কার্টার সিঁড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলেন। খুলে ফেললেন দরজা। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আরেকটি দরজা তাদের চোখে পড়ল। দ্বিতীয় দরজাটি পরীক্ষা করে তাদের মনে হলো, অতীতে কোনো এক সময় সেটি একবার খোলা হয়েছিল। তারপর সেটাকে আরও সিল করে দেওয়া হয়। তাদের সন্দেহ হলো, সম্ভবত সেখানে একবার ডাকাতি। অনেক মূল্যবান দ্রব্যই হয়তো লুট হয়েছে। তবুও হতাশ হলেন না তারা। সমাধির মধ্যে, অর্থাৎ এন্টিচেম্বারের ভেতর তখনো যা কিছু ছিল, তা দিয়ে ফারাও তুতেন খামেন সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিলেন।
১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর কার্টার দ্বিতীয় দরজাটির গায়ে একটা ফুটো করে এন্টিচেম্বারটির ভেতরে কী আছে তা দেখার চেষ্টা করলেন। কী দেখলেন তিনি? দেখলেন সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো পালঙ্ক, সোনা-রুপার তৈরি একটি সিংহাসন, খাদ্য সংরক্ষণের অনেক বাক্স এবং আরও মূল্যবোন কিছু জিনিসপত্র। সব কিছুই অগোছালা ছিল। কিন্তু কেন? এর কি কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়? যায় বৈকি। যেমন_ অতীতে সম্ভবত সেখানে লুটতরাজের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু প্রহরীদের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে লুটেরারা পালিয়ে যায় এবং তারপর প্রহরীরা কোনোকিছু গোছগাছ না করেই দরজাটি সিল করে দেয়।
পরবর্তী দুই মাস কার্টার এন্টিচেম্বারে রক্ষিত ওইসব মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রচুর ছবি তুললেন। কিন্তু শুধু ছবি তুলেই কারনাভান ও কার্টার সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। বহু চেষ্টা করে ১৯২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তারা দরজাটি ভাঙতে সক্ষম হলেন। এন্টিচেম্বারে সোনার তৈরি একটি বড় বাক্স ছিল। তার ভেতর ছিল একই রকম অপেক্ষাকৃত ছোট আরও তিনটি বাক্স। চতুর্থ বাক্সটি ছিল মূলত হলুদ স্ফটিকমণির তৈরি একটি কফিন। কফিনটির ভেতরে একই রকম আরও তিনটি কফিন পাওয়া গেল। শেষ কফিনটি ছিল সোনার তৈরি এবং তার ওজন ছিল প্রায় ১৩৫ কিলোগ্রাম। চতুর্থ কফিনটির ডালা খুলে প্রত্নতত্ত্ববিদদ্বয় আবিষ্কার করলেন ফারাও তুতেন খামেনের মমিকৃত দেহ। মৃত ফারাওর মাথা ও কাঁধ ঢাকা ছিল একটি চমৎকার স্বর্ণের মুখোশে। তার বুকের উপর পড়ে ছিল কিছু শুকনো ফুল। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ সমাধির আশপাশের বিভিন্ন কক্ষে পাওয়া গেল অসংখ্য মহামূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী, যার বেশির ভাগই ছিল স্বর্ণের। এসব সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, এক কথায় বলতে গেলে তুতেন খামেনের সমাধি আবিষ্কারের পর মানুষ রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়। কারণ তুতেন খামেন ফারাও রাজাদের মধ্যে খুবই অল্পসময় রাজত্ব করেন এবং খুবই অপরিচিত ছিলেন। তার সমাধিতেই যদি এত ধন-সম্পত্তি পাওয়া যায়, তাহলে বড় সমাধিগুলোতে কত সম্পত্তি লুকানো ছিল? বর্তমান যুগে এটি খুবই বড় একটি প্রশ্ন। কিন্তু সেসবের কথা ভেবে লাভ নেই। কারণ চোর-ডাকাতরা বহু আগেই সেসব সম্পদ নিজেদের করে নিয়েছে।
তুতেন খামেন খুবই অপরিচিত ফারাও রাজা ছিলেন বলে চোর-ডাকাতরা তার সমাধি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টাই হয়তো করেনি। এ কারণেই আধুনিক বিশ্বের আবিষ্কৃত একমাত্র অক্ষত সমাধিই হলো তুতেন খামেনের সমাধি। ওই সমাধিতে পাওয়া সব মূল্যবান জিনিসপত্র মিসরের প্রত্নতাত্তি্বক জাদুঘরে রাখা হয়েছে................. (আগামী পর্বে সমাপ্ত)
বিঃদ্রঃ ফেসবুক এর নিয়ম আনুযায়ী, আমাদের পোস্টে নিয়মিত লাইক না দিলে ধীরে ধীরে আমাদের পোস্ট আপনার অয়ালে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনার স্বার্থেই আমাদের পোস্ট নিয়মিত আপনার ওয়ালে দেখতে চাইলে প্রতিটি পোস্ট এ লাইক দিয়ে নিজেকে অ্যাক্টিভ রাখুন। এছাড়াও গেট নোটিফিকেশন অন করে রাখতে পারেন বা আমাদের পেজ বুকমার্ক করে রাখতে পারেন, তাহলে আমাদের সব পোস্ট আপনার হাতের নাগালেই থাকবে। ধন্যবাদ!!!
মাটি খুঁড়ে কার্টার প্রথমেই একটি সিঁড়ির সন্ধান পান। ফারাও তুতেন খামেনের নাম খোঁদাই করা একটি দরজায় গিয়ে সিঁড়িটি শেষ হয়েছে। কারনাভান ও কার্টার সিঁড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলেন। খুলে ফেললেন দরজা। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আরেকটি দরজা তাদের চোখে পড়ল। দ্বিতীয় দরজাটি পরীক্ষা করে তাদের মনে হলো, অতীতে কোনো এক সময় সেটি একবার খোলা হয়েছিল। তারপর সেটাকে আরও সিল করে দেওয়া হয়। তাদের সন্দেহ হলো, সম্ভবত সেখানে একবার ডাকাতি। অনেক মূল্যবান দ্রব্যই হয়তো লুট হয়েছে। তবুও হতাশ হলেন না তারা। সমাধির মধ্যে, অর্থাৎ এন্টিচেম্বারের ভেতর তখনো যা কিছু ছিল, তা দিয়ে ফারাও তুতেন খামেন সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিলেন।
১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর কার্টার দ্বিতীয় দরজাটির গায়ে একটা ফুটো করে এন্টিচেম্বারটির ভেতরে কী আছে তা দেখার চেষ্টা করলেন। কী দেখলেন তিনি? দেখলেন সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো পালঙ্ক, সোনা-রুপার তৈরি একটি সিংহাসন, খাদ্য সংরক্ষণের অনেক বাক্স এবং আরও মূল্যবোন কিছু জিনিসপত্র। সব কিছুই অগোছালা ছিল। কিন্তু কেন? এর কি কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়? যায় বৈকি। যেমন_ অতীতে সম্ভবত সেখানে লুটতরাজের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু প্রহরীদের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে লুটেরারা পালিয়ে যায় এবং তারপর প্রহরীরা কোনোকিছু গোছগাছ না করেই দরজাটি সিল করে দেয়।
পরবর্তী দুই মাস কার্টার এন্টিচেম্বারে রক্ষিত ওইসব মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রচুর ছবি তুললেন। কিন্তু শুধু ছবি তুলেই কারনাভান ও কার্টার সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। বহু চেষ্টা করে ১৯২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তারা দরজাটি ভাঙতে সক্ষম হলেন। এন্টিচেম্বারে সোনার তৈরি একটি বড় বাক্স ছিল। তার ভেতর ছিল একই রকম অপেক্ষাকৃত ছোট আরও তিনটি বাক্স। চতুর্থ বাক্সটি ছিল মূলত হলুদ স্ফটিকমণির তৈরি একটি কফিন। কফিনটির ভেতরে একই রকম আরও তিনটি কফিন পাওয়া গেল। শেষ কফিনটি ছিল সোনার তৈরি এবং তার ওজন ছিল প্রায় ১৩৫ কিলোগ্রাম। চতুর্থ কফিনটির ডালা খুলে প্রত্নতত্ত্ববিদদ্বয় আবিষ্কার করলেন ফারাও তুতেন খামেনের মমিকৃত দেহ। মৃত ফারাওর মাথা ও কাঁধ ঢাকা ছিল একটি চমৎকার স্বর্ণের মুখোশে। তার বুকের উপর পড়ে ছিল কিছু শুকনো ফুল। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ সমাধির আশপাশের বিভিন্ন কক্ষে পাওয়া গেল অসংখ্য মহামূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী, যার বেশির ভাগই ছিল স্বর্ণের। এসব সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, এক কথায় বলতে গেলে তুতেন খামেনের সমাধি আবিষ্কারের পর মানুষ রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়। কারণ তুতেন খামেন ফারাও রাজাদের মধ্যে খুবই অল্পসময় রাজত্ব করেন এবং খুবই অপরিচিত ছিলেন। তার সমাধিতেই যদি এত ধন-সম্পত্তি পাওয়া যায়, তাহলে বড় সমাধিগুলোতে কত সম্পত্তি লুকানো ছিল? বর্তমান যুগে এটি খুবই বড় একটি প্রশ্ন। কিন্তু সেসবের কথা ভেবে লাভ নেই। কারণ চোর-ডাকাতরা বহু আগেই সেসব সম্পদ নিজেদের করে নিয়েছে।
তুতেন খামেন খুবই অপরিচিত ফারাও রাজা ছিলেন বলে চোর-ডাকাতরা তার সমাধি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টাই হয়তো করেনি। এ কারণেই আধুনিক বিশ্বের আবিষ্কৃত একমাত্র অক্ষত সমাধিই হলো তুতেন খামেনের সমাধি। ওই সমাধিতে পাওয়া সব মূল্যবান জিনিসপত্র মিসরের প্রত্নতাত্তি্বক জাদুঘরে রাখা হয়েছে................. (আগামী পর্বে সমাপ্ত)
বিঃদ্রঃ ফেসবুক এর নিয়ম আনুযায়ী, আমাদের পোস্টে নিয়মিত লাইক না দিলে ধীরে ধীরে আমাদের পোস্ট আপনার অয়ালে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনার স্বার্থেই আমাদের পোস্ট নিয়মিত আপনার ওয়ালে দেখতে চাইলে প্রতিটি পোস্ট এ লাইক দিয়ে নিজেকে অ্যাক্টিভ রাখুন। এছাড়াও গেট নোটিফিকেশন অন করে রাখতে পারেন বা আমাদের পেজ বুকমার্ক করে রাখতে পারেন, তাহলে আমাদের সব পোস্ট আপনার হাতের নাগালেই থাকবে। ধন্যবাদ!!!
gpjs
Post a Comment