ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক হারাচ্ছে দেশে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি বছরের জুনের পর থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা কমেছে
১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯১। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বর্তমানে ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস (বিডব্লিউএ) লাইসেন্সের আওতায় দেশে তিন প্রতিষ্ঠান ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত
নিলামের মাধ্যমে ২১৫ কোটি টাকা দিয়ে বিডব্লিউএ লাইসেন্স নেয় বাংলালায়ন ও কিউবি। আর গত মাসে অনেক বিতর্কের মধ্য দিয়ে এ লাইসেন্স পেয়েছে ওলো।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে তাদের গ্রাহক বাড়লেও এরপর থেকেই হঠাৎ করে কমতে শুরু করে। জানুয়ারি-জুন সময়ে ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের
গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে ৩৭ হাজার ১৫৬। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ সেবার গ্রাহকসংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫২।
এদিকে গত জুনে ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৪ হাজার ৮০৮। পরের মাসে প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকসংখ্যা অপরিবর্তিত দেখানো হয়। তবে আগস্টে
১ লাখ ৮৯ হাজার ৫১১টি সংযোগ কমে প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৫ হাজার ২৯৭। সেপ্টেম্বরে আরো ৮২৮টি সংযোগ বন্ধ হয় তাদের। মাস শেষে ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের সক্রিয় সংযোগের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৯। আর অক্টোবর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৮১৭। অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানগুলোর
৩ হাজার ৬৫২টি সংযোগ বন্ধ হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে গ্রাহকরা অনেক দিন ধরেই অসন্তুষ্ট। দুর্বল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা, গ্রাহকসেবা কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনাসহ আরো
বেশ কিছু কারণে তৈরি হয়েছে এ অসন্তোষ। এছাড়া সম্প্রতি চার সেলফোন অপারেটরের থ্রিজি সেবা চালু হওয়ায় তারবিহীন দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন
সুযোগ তৈরি হওয়ায় ওয়াইম্যাক্স সংযোগ বন্ধ করছেন অনেকেই।
এ প্রসঙ্গে বাংলালায়নের হেড অব মার্কেট কমিউনিকেশন্স জিএম ফারুক খান ঢাকা ডনকে বলেন, সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যায় প্রতি মাসেই কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। এটি কখনো বাড়ে
আবার কখনো কমে যেতে পারে। তিনি বলেন, থ্রিজি প্রযুক্তির সেবা চালুর কারণে ওয়াইম্যাক্সের গ্রাহকসংখ্যার ওপর প্রভাব পড়বে না। বরং এটি ওয়াইম্যাক্সের জন্য সহায়ক হবে।
থ্রিজির মাধ্যমে যেসব নতুন গ্রাহক দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন তারাই পরে আরো উন্নত সেবার জন্য ওয়াইম্যাক্সের দিকে ঝুঁকবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিটিআরসি সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে কিউবির মোট গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৬৬৬। ২০১১ সালে এটি দাঁড়ায় ৮৬ হাজার ৮৩৬ ও ২০১২ সালে ১ লাখ
২৪ হাজার ৪৯৯। অন্যদিকে ২০১০ সালে বাংলালায়নের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৩০৪, ২০১১ সালে ২ লাখ ৪ হাজার ৭৪ এবং ২০১২ সালে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯০৯।
প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব সংযোগের মধ্যে শুধু যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোকেই সক্রিয় গ্রাহক বা সংযোগ হিসেবে ধরা হয়।
Post a Comment