Header Ads

test

শিরোপা জিতল সাকিবের প্রাইম ব্যাংক


শিরোপা জিতল সাকিবের প্রাইম ব্যাংক স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বছরের শেষ দিনেই বাজিমাত করেছে সাকিব আল হাসানের দল প্রাইম ব্যাংক। ২০১৩ সালের শেষ দিনে বিজয় দিবস টি২০ টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটি হয়েছে। আর সেই ম্যাচে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে সাকিবের দল। টি২০ বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে করা টুর্নামেন্টে তামিম ইকবালের ইউসিবিকে ৫৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রাইম ব্যাংক। নতুন বছরের উপহারও যেন পেয়ে গেছেন সাকিবরা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুপুরে শুরু হওয়া এ ম্যাচে টস জেতে প্রাইম ব্যাংক। আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। লিটন কুমারের ৬২ রানে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করে প্রাইম ব্যাংক। আল আমিন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান করে ইউসিবি। সেই সঙ্গে ইউসিবির হারও নিশ্চিত হয় এবং প্রাইম ব্যাংকের শিরোপা জেতাও নিশ্চিত হয়ে যায়। তাদের আনন্দ, উৎসব দেখে মনে হলো যেন নতুন বছরটি এ শিরোপা দিয়েই উদ্যাপন করল প্রাইম ব্যাংক। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন রনি তালুকদার। বল হাতে তাইজুল ২ উইকেট নেন। প্রাইম ব্যাংক যে রান করেছে তাতেই জয়ের আশা করা যায়। কিন্তু লীগপর্বে এ দুই দলের শেষ ম্যাচটিতে প্রাইম ব্যাংক ১৭৩ রান করেও হেরেছিল। সেই স্মৃতিও তরতাজা ছিল। আর শুরুতে প্রাইম ব্যাংক দুর্দান্ত খেলেও শেষ দিকে খেই হারিয়ে ফেলে। সেটিই প্রাইম ব্যাংকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারত। কিন্তু লিটনের ৬২ রানের পর সাব্বিরের ২৫, কাপালীর ১৮ রানে দল ভাল স্কোরই গড়ে। ব্যাটসম্যানরা সেট হয়ে আউট হয়ে যান। এটিই প্রাইম ব্যাংকের জন্য বিপদের আশঙ্কা তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত তা থেকে উতরে যায় সাকিবের দল। ইউসিবির অবস্থা শুরু থেকেই বিপত্তিতে ভরা থাকে। ১৬ রানেই দলের সেরা ব্যাটসম্যান তামিম আউট হন। এ আউটটি নিয়ে বিতর্ক আছে। তামিম ক্রিজও ছাড়তে চাননি। এ জন্য তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। এর পর এক এক করে ৭৬ রানে আরও ৪টি উইকেটের পতন ঘটে। ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে পড়ে যায় ইউসিবি। সেখানেই মূলত ম্যাচ হেরে যায় দলটি। ৯৫ রানে তাইজুলের বলে মুক্তারের অফ ড্রাইভ বলটি লং অফে দিয়ে মাঠের বাইরে চলেই যাচ্ছিল। এমন সময় লাফ দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন রুবেল হোসেন। সেখানে ম্যাচটি আসলে শেষই হয়ে যায়। এর পর সময়টুকু থাকে শুধু হারের ব্যবধান কমানোর। এক রানও যোগ না হতেই সাকিবের বলে শহীদও আউট হয়ে গেলে দ্রুতই ইউসিবির ইনিংসের পতন ঘটে যেতে পারে এমনই বোঝা যায়। শেষ পর্যন্ত ১২০ রানও করতে পারেনি ইউসিবি। কেন এমন হার হলো, যেখানে আগের ম্যাচেই প্রাইম ব্যাংককে হারিয়েছে ইউসিবি? ইউসিবির অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘আসলে আমার ওপরই সব নির্ভর ছিল। যখন আমি আউট হয়ে গেলাম, তখনই বোঝা গেছে খেলায় জেতা কঠিন। আমার আউটটি হয়নি। আমার ব্যাটে লাগেনি। অথচ আম্পায়ার (সৈকত) আউট দিয়ে দিলেন। কেন যে আমার সঙ্গেই এমন হয়? আগের ম্যাচেও আমাকে বাজেভাবে আউট দেয়া হয়েছে। এবার যে আউট দেয়া হলো না এমন আউট কখনও দেখেছি, না আর দেখব। প্রাইম ব্যাংক শুরুতে যেভাবে খেলছিল, তাতে ২০০ রানও করে ফেলতে পারত। সেখান থেকে তাদের আটকে রাখা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি দ্রুত আউট হয়ে যাওয়াতে এ রান অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। আমাদের দল এমনিতেই খুব ভাল নয়। আশাই করিনি এত দূর আসব। শেষ পর্যন্ত এসেছি। অনেক ভাল লাগছে। শুধু স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে এমন টুর্নামেন্ট হওয়া উচিত।’ বিজয়ী দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ভাগ্য তাঁর এতটাই ভাল যে যতই খারাপ অবস্থায় থাকুন দিনশেষে তার কপালেই ভাল কিছু জুটে যায়। যেমন চ্যাম্পিয়নই হয়ে গেলেন। দলের এমন নৈপুণ্য ও নিজের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নিয়ে বলতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘ভাল লাগছে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তবে আমাদের দল আগে থেকেই ভাল ছিল এবং যে দল তাতে বিশ্বাস ছিল আমরাই জিতব। আমি কোন অনুশীলন না করেই মাঠে নেমেছি। এর পরও যতটুকু খেলেছি, তাতে ভাল লাগছে। এমন টুর্নামেন্ট হওয়া উচিত। তবে আন্তর্জাতিক খেলাও জরুরী। তাতে করে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হবে।’ রুবেল হোসেন দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নিয়েছেন। আর তাতেই প্রাইম ব্যাংকের জেতা নিশ্চিত হয়ে যায়। সঙ্গে ১ উইকেটও তুলে নিয়েছেন। আর তাই রুবেলকেই ম্যাচসেরার পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। আর এনামুল হক বিজয় টুর্নামেন্ট সেরা হন। ৬ ম্যাচে ২৭১ রান ও উইকেটের পেছনে থেকে ৪টি ক্যাচ, ৮টি স্ট্যাম্পিং ও ১টি রান আউট করায় ১ লাখ টাকার টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারটি পান এনামুলই। এনামুলের নামটি টুর্নামেন্ট সেরার জন্য ঘোষণা করতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে পুরস্কার নিতে আসেন এনামুল। পুরস্কার নেয়া শেষে বলেন, ‘অসাধারণ লাগছে। অসম্ভব ভাল লাগছে। এমন একটি টুর্নামেন্টে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমি নৈপুণ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করে যাব।’

No comments