Header Ads

test

ছেলের উদ্দেশে কাদের মোল্লা আরো বলেন


স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কাদের মোল্লা 12 Dec, 2013 ‘সাংগঠনিক কাজে বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকায় তোমার হক সঠিকভাবে আদায় করতে পারিনি, তোমাকে সময় দিতে পারিনি, আমাকে ক্ষমা করে দিও।’ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে নিজের স্ত্রীর কাছে এভাবেই ক্ষমা চেয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল কাদের মোল্লা। ছেলে হাসান জামিলসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের অভিভাবক ছিলাম। এ সরকার যদি আমাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে তাহলে সেটা হবে আমার শাহাদাতের মৃত্যু। আমার শাহাদাতের পর মহান রাব্বুল আলামীন তোমাদের অভিভাবক হবেন। তিনিই উত্তম অভিভাবক।’ ছেলের উদ্দেশে কাদের মোল্লা আরো বলেন, ‘তোমাদের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার মাধ্যমে আমার হত্যার প্রতিশোধ নিও।’ পরিবারের সাথে কাদের মোল্লা কথাবার্তা বলেছেন স্বাভাবিকভাবেই। সেথানে উপস্থিত বাচ্চাদেরকে আদর করেছেন বলেও জানান পবিবারের সদস্যরা। নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধেই আমাকে হত্যা করা হচ্ছে। শাহাদাতের মৃত্যু সকলের নসিবে হয় না। আল্লাহতায়ালা যাকে শহীদী মৃত্যু দেন সে সৌভাগ্যবান। আমি শহীদী মৃত্যুর অধিকারী হলে তা হবে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। আমার প্রতিটি রক্তকণিকা ইসলামী আন্দোলনকে বেগবান করবে এবং জালেমের ধ্বংস ডেকে আনবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমি নিজের জন্য চিন্তিত নই। আমি দেশের ভবিষ্যৎ ও ইসলামী আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত। আমার জানা মতে আমি কোন অন্যায় করিনি। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলনের জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করেছি। আমি অন্যায়ের কাছে কখনও মাথা নত করিনি, করবো না। দুনিয়ার কোন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। জীবনের মালিক আল্লাহ। কিভাবে আমার মৃত্যু হবে তা আল্লাহই নির্ধারণ করবেন। কোন ব্যক্তির সিদ্ধান্তে আমার মৃত্যু কার্যকর হবে না। আল্লাহর ফয়সালা অনুযায়ীই আমার মৃত্যুর সময় ও তা কার্যকর হবে। সুতরাং আমি আল্লাহর ফয়সালা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেবো। পরিবারের সদস্যদের তিনি আরও বলেন, তোমরা ধৈর্যের পরিচয় দেবে। একমাত্র ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালার ঘোষিত পুরস্কার পাওয়া সম্ভব। দুনিয়া নয়, আখেরাতের মুক্তিই আমার কাম্য। আমি দেশবাসীর কাছে আমার শাহাদত কবুলিয়াতের জন্য দোয়া চাই। দেশবাসীর কাছে আমার সালাম পৌঁছে দিও। বিদায় বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা বলেন তিনি, ‘ধৈর্য ধরো, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখো। তোমার হক যথাযথভাবে আদায় করতে পারিনি বলে ক্ষমা করে দিও।’ উত্তরে তার স্ত্রী বলেন- ‘দীর্ঘদিন কারাবন্দী থাকায় আপনার সেবা করতে পারিনি। বিদায়বেলায়ও পাশে থাকতে পারছি না। জীবন চলার পথে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কোন অন্যায় হয়ে থাকলে মাফ করে দেবেন।’ এ সময় খানিকটা আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হলেও কাদের মোল্লা ছিলেন দৃঢ়, অবিচল। সর্বশেষ ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলে তিনি সবার কাছ থেকে বিদায় নেন।

No comments