Header Ads

test

গোলাম মাওলা রনি।-শেখ হাসিনার রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন

১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৭:৩৪ টা ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৭:৫৪ টা শেখ হাসিনার রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রনি পরিবর্তন প্রতিবেদক • প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক কৌশল এবং পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রাজনীতিক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, "বঙ্গবন্ধুর সেই ট্র্যাজেডিকে তার কন্যা কিভাবে প্রতিশোধ আকারে ফিরিয়ে দিয়েছেন তা বর্তমান রাজনীতি পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে। বাংলাদেশের মতো দেশে এসে কোন মার্কিন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে পাননি- এমন ঘটনা গত ৫০/১০০ বছরে পৃথিবীতে ঘটেনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারেনি। সাম্প্রতিককালে জন কেরির ফোনের অনুরোধকে উপক্ষো করার দৃঢ়তা ও সাহস সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে।" সোমবার বিকেল সোয়া ৫ টায় গোলাম মাওলা রনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্টাটাসে এসব কথা লিখেন। তিনি আরো বলেন, "ইসলাম ধর্মে আছে- মৃত পিতা-মাতার কবরে জীবিত সন্তানের সাপ্তাহিক বা মাসিক সুকর্ম ও কুকর্মগুলোকে পৌছে দেবার জন্য একদল ফেরেশতা নিয়োজিত রয়েছে। তারা নিয়মিত মৃত ব্যক্তিদেরকে তাদের সন্তানের কৃতকর্মের খোঁজ খবর পৌছে দেয়। সে মতে নিশ্চয় বঙ্গবন্ধুর কবরে জননেত্রীর খবরাখবর পৌছানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কেমন বোধ করছেন? এর উত্তর তো স্বয়ং আল্লাহ আর তার রাসুল (স:) ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না।" পরিবর্তন-এর পাঠকদের জন্য গোলাম মাওলা রনির স্টাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী ও আপেক্ষিক শ্রেষ্ঠত্বের ইতিকথা বাংলাদেশের জননেত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কি তার পিতার রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্বের সীমা অতিক্রম করতে যাচ্ছেন- এমনটি নিয়ে কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম। অনেক সময় পিতা-পুত্র বা পুত্র কণ্যারা একে অপরের সঙ্গে এক ধরনের নীরব অথচ মধুর প্রতিযোগীতায় নামেন- নিজেকে অধিকতর শ্রেষ্ঠ প্রমানের জন্য। কেউ দেখতে পায়না সেই প্রতিযোগীতা কিন্তু বহু বছর পরে মানুষের অন্তর্নিহিত চোখ ঠিকই তা খুজেঁ বের করে। বিবিসি নির্মিত অটোম্যান সাম্রাজ্যের একটি প্রামান্য চিত্র দেখার পর আমার কেবলই মনে হচ্ছিলো বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, তার সফলতা আর ব্যর্থতার ওপর জননেত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের প্রাসাদ নির্মানের সঙ্গোপন কৌশলের কথা। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলার আগে বিবিসি নির্মিত চলচিত্রটি সম্পর্কে বলে নেই। অটোম্যান সম্রাট দ্বিতীয় মুরাদ ইউরোপ-এশিয়ার বিরাট অংশ জয় করে সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিলেন। এরপর হঠাৎ করেই রাজনীতির প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেললেন। বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে নিজের ১২ বছর বয়সী যুবরাজ দ্বিতীয় মুহম্মদ এর অনুকুলে সিংহাসন ত্যাগ করে অবসরে চলে গেলেন। তার দীর্ঘ দিনের বিশ্বস্ত উজির- নাজির এবং সেনাপতিগণের ওপর দায়িত্ব দিলেন বালক সুলতানকে দেখে রাখার জন্য। সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদ যতই বড় হতে লাগলেন ততই তার পিতার অনুপম মহান কীর্তিগুলো বার বার তার সামনে আসতে লাগলো। বিশেষ করে জেনিসারী বাহিনীর মধ্যে তার পিতার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা তাকে ঈর্ষাপরায়ন করে তুললো। তিনি চাইলেন এমন কিছু করার জন্য যা কিনা পিতার শ্রেষ্ঠত্বের ওপর তাকে স্থান দিবে। তৎকালীন বিশ্বে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী কনসটান্টিনোপল ছিলো ইউরোপের রাজা বাদশাহ এবং খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের নিকট গর্বের ধন। সুলতান সিদ্ধান্ত নিলেন কনসটান্টিনোপল দখল করার জন্য। মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে সুরক্ষিত সর্ববৃহৎ নগরটি দখল করা কিন্তু অতো সহজ ছিলো না। গত এক হাজার বছর ধরে দুনিয়ার সকল বড় বড় রাজা বাদশাগণ চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। মুসলমানরাও চেষ্টা করে আসছিলো দুটি প্রধান কারনকে সামনে রেখে- প্রথমত: আল্লার রাসুল (স:) ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন যে- একদিন মুসলমানরা কনসটান্টিনোপল জয় করবে। দ্বিতীয়ত: এটি জয়ের মাধ্যমে শহরটির প্রতিষ্ঠাতা মহামতি রোমান সম্রাট কনসটানটাইন দি গ্রেটের উচ্চতা ও শ্রেষ্ঠত্বকে ছাড়িয়ে যাবার মোহ। ফলে হযরত আমির মাবিয়া (রা:), বাদশাহ হারুন অর রশিদ, খলিফা আলমাধুন সহ অনেকেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বারংবার। এমনি একটি অসাধ্য কাজ করার পেছনে সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদের উচ্চাভিলাসের নেপথ্যে ছিলো তার পিতার গৌরবকে ছাড়িয়ে যাবার বাসনা। ইতিহাস স্বাক্ষী- বাস্তবে হয়েছিলোও তাই। মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদ কনসটান্টিনোপল দখল করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্ম এবং সফলতা তার মহান পিতার রাজনৈতিক সফলতা ও ব্যর্থতার ওপর সমন্বিত সাফল্যের সৌধ নির্মান করছে একর পর এক। সম্ভবত এশিয়ার রাজনীতি নয় বরং পৃথিবীর রাজনীতিতে তিনিই একমাত্র কন্যা যিনি তার শাসক পিতা এবং পরিবারের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহন করতে পেরেছেনে আইনগত কাঠামোর মধ্যে থেকে। শুধু কি তাই- পিতা যেখানে যেখানে ব্যর্থ হয়েছিলেন- ঠিক সেই জায়গা গুলোতে তিনি সফলতা দেখিয়েছেন। যেখানে যেখানে অপমানিত ও লাঞ্চিত হয়েছেন ঠিক সেই যায়গা গুলোতে অপমান, লাঞ্চনা আর তাচ্ছিল্যতা দিয়ে প্রতিপক্ষের ঋণ কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। সেটি আবার কিরুপ? একটু ব্যাখ্যা কররেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রথমেই আসি বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশসমুহ এবং সৌদি আরবসহ মধ্য প্রাচ্যের মুসলিম দেশ সমুহের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সকলেই নানা রকম বাজে মন্তব্য করে এবং অশ্লীল আচরণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মর্যাদা হানি করেছে। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারের গালি, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের উদ্ধত ও অসম্মানজনক আচরণ এবং সৌদি বাদশার অসৌজন্যতা জাতি ভুলে নাই। এমনকি ভারত ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খেলেছে। তাকে পরিপূর্ন আস্থায় আনতে পারেনি ভারত। অধিকন্ত তলে তলে বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের যে তারা উৎসাহ দিতো তা বুঝা যায় ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সমর সেন কর্তৃক খোন্দকার মোস্তাকের জন্য দূতাবাসে একটি অুনষ্ঠান আয়োজনের ঘটনা থেকে। বঙ্গবন্ধুর সেই ট্র্যাজেডিকে তার কন্যা কিভাবে প্রতিশোধ আকারে ফিরিয়ে দিয়েছেন তা বর্তমান রাজনীতি পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে। বাংলাদেশের মতো দেশে এসে কোন মার্কিন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে পাননি- এমন ঘটনা গত ৫০/১০০ বছরে পৃথিবীতে ঘটেনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারেনি। সাম্প্রতিককালে জন কেরীর ফোনের অনুরোধকে উপক্ষো করার দৃঢ়তা ও সাহস সর্বমহলে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সকাল বিকেল দেখা করবেন- এমন স্বপ্ন দেখার সাধ ও সাধ্য তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। অন্যদিকে ভারতকে তিনি কূটনৈতিক চালে এমন একস্থানে এনে ঠেকিয়েছেন যে কোনো সাধ্য নেই ভারতের বর্তমান সরকারকে সমর্থন দেয়া ছাড়া। প্রধানমন্ত্রী বীরদর্পে বিশ্ব ব্যাংককে বলে দিলেন- পদ্মা সেতুতে তোমাদের টাকা লাগবে না। চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরব- যারা আামদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো এবং বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নানাভাবে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করেছিল- তারা সবাই স্ব স্ব কুটনৈতিক চ্যানেলে জননেত্রীর কাছ থেকে উচিৎ জবাব পেয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। ঐ সব দেশের এদেশীয় সমর্থকরা নানা কথা বলে ভয় দেখাচ্ছে আর বলছে- হ্যান করেঙ্গে, ত্যাং করেঙ্গে, লাঠিকে আন্ধার মুগুর ভরেঙ্গে- ইত্যাদি। আর বাংলাদেশ সগর্ভে মাথা উচু করে এগিয়েই যাচ্ছে। এবার আসি- আন্ত: দেশীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে। বঙ্গবন্ধুর অনেক বেদনা ছিলো এবং বেদনাহত হয়েই তাকে মরতে হয়েছে। তার রাজনৈতিক জীবনে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। সহকর্মীরা সূযোগ পেলেই বেইমানী- মোনাফেকী করতো। অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জঘন্য ভাষায় গালাগালি, মারামারি ও অরাজকতা সৃষ্টি করে তার জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছিলো। নিজ দলের কতিপয় সহযোগি এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণের নেতৃবৃন্দের জল-স্থল-অন্তরীক্ষের আক্রমনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুন হতে হয়েছিলো ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তারিখে। এসব ইতিহাস খুব ভালো করেই জানতেন বঙ্গবন্ধু দূহিতা। তার দুইবারের ক্ষমতাকালীন সময়ে অত্যন্ত ধীরলয়ে তিনি সবাইকে সাইজ করেছেন আচ্ছা মতো। যারা বঙ্গবন্ধুকে গালাগাল দিতো তাদেরকে মন্ত্রী এমপি বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মালা দিতে বাধ্য করেছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই-সংগ্রাম করেছেন তাদেরকে একটু হালুয়া কিংবা একটু রুটির ভাগ দিয়ে তাদের দ্বারাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করাচ্ছেন। এমনকি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এবং রওশন এরশাদকেও কড়ায় গন্ডায় সব কিছু ফেরত দিয়েছেন। তিনি ভুলে যাননি- চট্টগ্রামে তার জনসভা লক্ষ্য করে এরশাদ বাহিনীর সরাসরি গুলি, খুনি ফারুক-রশিদকে বাংলাদেশ ডেকে এনে এমপি বানানোর খেলা ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগকে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কথা সবশেষে তাকে গৃহবন্দী করে রাখার স্মৃতি। এবার সম্মানিত পাঠকগণই সিদ্ধান্ত নিন- তিনি এরশাদের দায় কতটুুকু পরিশোধ করেছেন? প্রতিটি দেশে গণতন্ত্রের আলাদা আর ভিন্ন একটি রুপ আছে। ভারতের গণতন্ত্র আর বিলেতের গণতন্ত্র এক না। কিম্বা যুক্তরাষ্ট্র আর জার্মানীর গণতন্ত্র এক নয়। তদ্রুপ বাংলাদেশের গণতন্ত্রও যে ভিন্ন হতে পারে তারই প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- এখন সময়ই বলে দিবে কি আছে তার নিয়তিতে। ইসলাম ধর্মে আছে- মৃত পিতা-মাতার কবরে জীবিত সন্তানের সাপ্তাহিক বা মাসিক সুকর্ম ও কুকর্ম গুলোকে পৌছে দেবার জন্য একদল ফেরেসতা নিয়োজিত রয়েছে। তারা নিয়মিত মৃত ব্যক্তিদেরকে তাদের সন্তানের কৃতকর্মের খোঁজ খবর পৌছে দেয়। সে মতে নিশ্চয় বঙ্গবন্ধুর কবরে জননেত্রীর খবরাখবর পৌছানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কেমন বোধ করছেন? এর উত্তর তো স্বয়ং আল্লাহ আর তার রাসুল (স:) ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না।" যাকা

No comments