MAN ANIMAL AFRICA
posted PM by hasan ali
আফ্রিকার পশু মানব
অন্ধকার আচ্ছন্ন মহাদেশ আফ্রিকার বহু অঞ্চলের প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে দুষ্ট আত্মা এবং বিশেষ কিছু লোক নিজেদের যে কোন ধরনের প্রাণীতে পরিণত করতে পারে যেমনটা মধ্যযুগে ইউরোপে বিশ্বাস করা হতো ওয়ারউলফ(নেকড়ে মানব) বা ভ্যাম্পায়ারে।
আফ্রিকায় কথিত আছে হায়েনা-মানুষ অসহায় অবস্থায় অন্য মানুষকে পেলে তাকে খেয়ে ফেলে। তাদের গৃহপালিত প্রাণীও খায়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি এবং নাইজেরিয়ায় এই বিশ্বাস ব্যাপক প্রচলিত। আসলে উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় বর্নু ভাষায় একটি বিশেষ শব্দ প্রচলিত আছে। যেসব প্রাণী নিজের রূপ পরিবর্তন করে তাদের জন্য এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। শব্দটা হচ্ছে ‘বুল্টুংগিন’। এর অর্থ হচ্ছে, ‘আমি নিজেকে হায়েনায় পরিণত করতে পারি।’
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে হায়েনা মানবের শরীর বেশ সুঠাম। তবে দুটি আলাদা মুখ আছে। একটি দিয়ে কথা বলে এবং আরেকটি দিয়ে মানুষের হাড়গুলো চিবায়। হায়না মানুষের দাঁতগুলো বেশ বড় বড়। এই হাড় খাওয়ার মুখটি স্বাভাবিক সময়ে গোপন করে রাখে, যাতে কোন হতভাগ্য শিকার তা দেখতে না পায়।
পশ্চিম আফ্রিকার জায়ারে এবং সিয়েরা লিওনে আছে রহস্যময় এবং ভয়ঙ্কর চিতা-মানব। তাদের মতে তারা ইচ্ছেমত নিজেদের চেহারা পরিবর্তন করে চিতাবাঘে পরিণত করতে পারে। তারা মুগুর দিয়ে পিটিয়ে অসহায় শিকারকে মেরে ফেলে।
১৯৮০ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অনুসন্ধান কাজ চলাকালে বিল গিবনস কিছু উত্তেজনাকর গল্প শুনেছিলেন। তিনি শুনেছিলেন কিছু ডাইনী ডাক্তারের কথা। এরা নিজেদের রূপ পাল্টিয়ে অজগর হয়ে যেতে পারে।
আবার সোমালি প্রজাতন্ত্রে প্রচলিত আছে মানব-কুমিরের বিশ্বাস। ডেভিট লিভিংস্টোন বহু সিংহ-মানবের কথা শুনেছেন। ১৯৯২ সালে তুরস্কের প্রত্নতত্নবিদেরা ঘোষণা করলেন, ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত টপকাপি প্রাসাদের ভল্টে পাওয়া গেছে একটি অদ্ভুত প্রাচীন মিশরীয় মমি। একটি পুরোন সিন্দুকে এই মমিটি রক্ষিত ছিল। মমিটি সাবধানে খোলা হলো। বেরিয়ে এল এক অদ্ভুত প্রাণী। এর উপরের অংশ এক কিশোর বালকের এবং নিচের অংশ কুমিরের। এই রহস্যের কিনারা এখনও হয়নি। কিছু কিছু গবেষক বলেছেন কুমির ওই বালকটির অর্ধেক অংশ খেয়ে ফেলেছে। পরবর্তীতে তার বাবা-মা তাদের ছেলের স্মৃতি ধরে রাখার উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী একটি কুমির মেরে নিচের অংশ বালকটির উপরের অংশের সাথে যুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্ত অন্যান্য গবেষকদের কাছে এই কথাটি আরও রহস্যময় বলে মনে হয়।
প্রাচীন মিশরে ছিল কুমির দেবতা। ধারণা করা হয় সিবেকের প্রার্থনাকারীরা এমন একটি মূর্তি তৈরী করেছিল। ওই কুমির দেবতা ছিল নদী ও হ্রদের দেবতা। অথবা এমনও হতে পারে প্রদর্শনীতে টাকা উপার্জন করার জন্য এটি তৈরী করা হয়েছে প্রতারনার উদ্দেশ্যে।
দানবের এমন বিশ্বাস আমেরিকায়ও প্রচলিত আছে। এমন একটি হচ্ছে জ্যাক দ্য অ্যালিগেটর। এতে আছে নিচের অংশ কুমির এবং উপরের অংশ বানরের। ক্যালিফোর্নিয়ার লং-বিচের ফ্রী মিউজিয়ামে এখনও এই প্রাণীটি আছে।
GPJS
Post a Comment