ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডেভসটিম ইন্সটিটিউট পেজের আলোড়ন সৃষ্টিকারী সেই পোষ্ট, যা এখনো বিভিন্ন পেইজ কিংবা ওয়েবসাইটে ঘুরে ফিরে দেখা যায়।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার ১৯ কিলার টিপস! (প্রথম পর্ব)
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সবে মাত্র ক্যারিয়ার শুরু করছেন? কিংবা কিছুদিন কাজ করেছেন? এখন সফলতা নিয়ে নিজের মাঝে জড়তা কাজ করছে?
তাহলে পোষ্টটি একটু মনযোগ দিয়ে পড়ুন। উপরের এই দুই ঘটনার একটিও যদি আপনার সাথে মিলে যায় তবে আপনি সঠিক পথে হাটার দিকনির্দেশনা খুঁজে পাবেন। তবে একটা কথা সবসময়ই মনে রাখবেন, পথে নামলেই পথ চেনা যায়। আপনি পথে নেমেছেন, তো হাটতে থাকুন। পথই আপনাকে পথ দেখাবে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফলতার পেছনে টিপসের যত ঝুড়ি আছে তার মধ্যে ৩৮টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তবে পাঠকদের সুবিধার্তে আজ ১৯টি টিপস সম্পর্কে জানাবো। হতে পারে ফ্রিল্যন্সিং খুব কঠিন, সত্যিই খুব কঠিন কাজ। হয়তো নিরুৎসাহিতও হয়ে যেতে পারেন, মনে হতে পারে এ পথ আপনার জন্যে নয় কিংবা ছেড়ে দেবার জন্যে মনটা আকুপাকু করছে।
মনে রাখবেন, এই পথে মোকাবেলা করার মত অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, সমাধান করার মত অনেক সমস্যা আছে। তবে কথা হল আপনি সেটাকে সমস্যা হিসেবে দেখছেন নাকি সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন, অনেকখানি সেটার উপরেই নির্ভর করছে আপনি সেটাকে কিভাবে সমাধান করবেন ।
পোষ্টটি লিখার উদ্দ্যেশ্য হল, এটি আপনাকে সঠিক পথে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। বলতে পারেন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের জন্যে এই পোষ্টটি একটি রিমাইন্ডার, আর নতুনদের জন্যে চেকলিষ্ট।
টিপসগুলোঃ
১. নিজের প্রচারণা চালান
নতুন কাজ পাওয়া কিংবা পুরাতন ক্লায়েন্টের কাজ পুনরায় পেতে প্রচারণা ও যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি জরুরী। নিজের যোগ্যতাগুলোকে তুলে ধরুন। কখনোই থামবেন না, এমনকি আপনি যখন ব্যস্ত থাকবেন তখনো। মনে রাখবেন পৃথিবী যোগ্যতাকে সম্মান করে।
২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থাকুন
আপনি জানেন কি, সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট খুঁজে পেতে ওডেস্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সারের মত মার্কেটপ্লেসগুলোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন কমিউনিটিগুলো যেমন ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কেডিন অন্যতম ভাল মাধ্যম। তাই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে নিজেকে আপডেটেড রাখুন।
৩. নিজের একটি সাইট তৈরী করুন
আপনার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট তৈরী করুন, যেখানে আপনি আপনার এক্সপার্টাইজ এবং কাজের সম্পূর্ণ বিবরণ স্পষ্টভাবে তুলে ধরবেন। এতে সুবিধা হল ছোট্ট একটা লিঙ্কই আপনার কথা বলবে। ক্লায়েন্টের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতাকেও অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।
৪. দক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করতে ব্লগিং করুন
আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করছেন সেই বিষয়ে নিজেকে অন্যের কাছে দক্ষ এবং জ্ঞানী হিসেবে তুলে ধরতে ব্লগিং একটি দুর্দান্ত উপায়। নিজের বা অন্যের ওয়েবসাইটে আপনার দক্ষতার বিষয়টিতে ব্লগিং করুন।
৫.আপনার কাজের সবচেয়ে ভাল দিকটা জানুন
প্রতিটি মানুষই কাজ এবং দক্ষতার দিক দিয়ে অনন্য। আপনি আপনার সেই অনন্যতাকে খুঁজে বের করুন। আপনি কোন কাজটায় পারদর্শী সেটা জানা থাকলে কাজ করা এবং নিজের মার্কেটিং করা, দুটো কাজ করতেই আপনার অনেক সুবিধা হবে।
৬. পোর্টফোলিও আপডেটেড রাখুন
নিয়মিত আপনার পোর্টফোলিও পর্যালোচনা করুন এবং আপডেট রাখুন। লক্ষ্য রাখুন আপনার ভাল কাজগুলো যেন সবার আগে প্রদর্শিত হয়।
৭. কথা বলতে শিখুন
সবসময় এটা ভাববেন না যে ক্লায়েন্ট এসে আপনাকে নক করবে, সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করুন। সুযোগ যদি কড়া না নাড়ে তবে আগে দরজা বানান।
৮. সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের বিষয়ে পর্যালোচনা করুন
যাদের সাথে কাজ করবেন তাদের সম্পর্কে ভাল করে কিছু না জেনে কোন ধরনের চুক্তি না করাই ভাল। ক্লায়েন্ট এবং কাজ দুটো সম্পর্কেই আগে জেনে নিন, নইলে পরবর্তীতে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৯. শুনতে শিখুন এবং প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করুন
ক্লায়েন্ট কি চায় শুধুমাত্র সেটা ধারণা করেই কি করতে হবে সেটা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত না নেয়াই ভাল। ভাল করে শুনুন সে কি চায়, পরিষ্কার ধারণা না পেলে প্রশ্ন করুন।
১০. ভদ্র আচরন করুন
হতে পারে আমরা খুব রূঢ় পরিবেশে বসবাস করি, কিন্তু এটা অন্যের কাছে প্রকাশ করা কোনভাবেই উচিত নয়। ভদ্র আচরণ আপনাকে লক্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী করে তুলবে, আপনি হয়ে উঠবেন অতুলনীয়।
১১. আলোচনা করতে শিখুন
ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে যেকোন প্রস্তাব বা শর্তাবলী যে আপনাকে মেনে নিতে হবে তেমন কোন নিয়ম নেই বা করবেন না। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি একটি চুক্তির সব দিক নিয়ে আলোচনা কিংবা দরাদরি করতে পারেন।
১২. নিজের সুযোগ তৈরী করে নিন
ক্লায়েন্ট কি চায় সেটা সম্পর্কে আপনি পুরো অবগত আছেন তো? কাজ সম্পর্কে যতটা সম্ভব সুনির্দিষ্ট ধারণা নিয়ে নিন।
১৩. নিরপেক্ষভাবে কাজের দাম মূল্যায়ন করুন
অনেকে হয়ত কাজ পাননা তাই কম খরচে ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদান করতে চান। কখনোই এটা করবেন না, বরং মানসম্মত কাজ উপস্থাপন করে যথাযথ দাম নির্ধারণ করুন।
১৪. মানা করতে ভয় পাবেন না
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এ প্রতিটি সুযোগই যে আপনার জন্যে পারফেক্ট হবে তেমনটি ভাববেন না। যদি বুঝতে পারেন কাজটি আপনার জন্যে না, তবে কাজটি প্রত্যাখ্যান করতে ভয় পাবেন না। হাতের কাজ ও সময় কতটা আছে সেটা বিবেচনা করে হ্যাঁ বলুন। মনে রাখবেন,বিনীত হয়ে ‘না’ বলতে পারাটাও যোগ্যতার একটা অংশ।
১৫. কি কাজ করবেন সেটার লিখিত ব্যাখ্যা চান
কাজ শুরু করার আগে একটি লিখিত চুক্তি করে নিন অথবা কি কি কাজ করবেন সেটার একটা লিখিত তালিকা নিয়ে নিন। এছাড়া শুরু না করাই ভাল।
১৬. বিরক্ত হবেন না
কাজ শুরু করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার কাজের পরিবেশ আপনার কাজের সাথে যেন সর্বোচ্চ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ কাজের মাঝে মনযোগের বিক্ষেপ ঘটলে কাজটি শেষ করতে বেশী সময় লাগতে পারে কিংবা কাজের মান সম্পর্কে আপনি নিজেই সন্তুষ্ট হতে পারবেন না।
১৭. রুটিন মেনে চলুন
বেশীরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা এটা স্বীকার করেন, তারা যখন কাজের নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করে কাজ করেন তখন তাদের কাজের প্রোডাক্টিভিটি অনেকাংশেই বেড়ে যায়। তাই কাজ করার সময় রুটিন অনুসরণ করুন।
১৮. কাজ করার স্থানটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন
নোংরা পরিবেশ আপনার কাজের গতি এবং সাহস অনেকখানি কমিয়ে দেয় যা আপনি হয়তো কখনো বুঝতেও পারবেন না। আপনি যদি অগোছালো প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকুন তবে আজ একদিনের জন্যে হলেও কাজের স্থানটি গুছিয়ে তারপর কাজ করুন। বিশ্বাস করুন, পার্থক্যটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
১৯. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফলতা লাভের অন্যতম শর্ত হল সুস্থ থাকা। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সাররা অসুস্থতার জন্য কাজ করতে পারেন না। আর এই অসুস্থতার অন্যতম বড় কারণ হল ভুল খাদ্যাভ্যাস। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
Post a Comment